কেজিআর কিওয়ার্ড রিসার্চ কী
কেজিআর বা কিওয়ার্ড গোল্ডেন রেশিও বলতে এমন শব্দকে বোঝায়, যা দিয়ে খুব সহজে কম সময়ে শুধু অন-পেজ এসইও (ওয়েবসাইটকে যাতে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের দেওয়া তালিকার প্রথম পৃষ্ঠায় আনা যায়) করে গুগলের প্রথম পেজের তালিকায় রাখতে পারবেন। একে র্যাঙ্ক করা বলে। এই কেজিআর কিওয়ার্ড আবিষ্কার করেন নিশে সাইট প্রজেক্টের প্রধান নির্বাহী ডোয়াগ কানিংটন। ‘অলইনটাইটেল (লেখার শিরোনামে যে শব্দ থাকে)’ দিয়ে গুগল থেকে যে সার্চ রেজাল্ট পাওয়া যায়, তার সংখ্যাকে ওই কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম (শব্দটি দিয়ে কতবার তথ্য খোঁজা হয়েছে) দিয়ে ভাগ করলে যে ফল পাওয়া যায়, সেটিই মূলত কিওয়ার্ড গোল্ডেন রেশিও। কেজিআর কিওয়ার্ড বলতে লং টেইল কিওয়ার্ডকে বোঝায়। যেখানে পাঁচ বা তার বেশি শব্দ কিংবা শব্দগুচ্ছ থাকে। কেজিআরের অনুপাত ০.২৫ বা তার নিচে হলে র্যাঙ্ক পাওয়া অনেক সহজ হয়। আর যদি ০.২৫ থেকে ১–এর মধ্যে হয়, তাহলে র্যাঙ্ক পেতে সময় লাগবে এবং যদি ১–এর বেশি হয়, তাহলে পাওয়া কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ হবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কেজিআর কিওয়ার্ড হচ্ছে যেসব শব্দ নিয়ে খুব বেশি কাজ করা হয়নি এবং যেসব কিওয়ার্ডের প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। এই বিষয়কে একটি গাণিতিক সূত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করে সেটার নাম দেওয়া হয়েছে, কেজিআর। এই সূত্রে এমন সব কিওয়ার্ড পাওয়া যায়, যেগুলো নিয়ে ইন্টারনেটে খুব বেশি আধেয় (কনটেন্ট) নেই। তাই এই কিওয়ার্ডগুলো নিয়ে কোনো লেখা বা আর্টিকেল লিখলে খুব সহজেই সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করা যায়।
কীভাবে কেজিআর কিওয়ার্ড রিসার্চ করবেন
কেজিআর কিওয়ার্ড গবেষণার রিসার্চ করার জন্য আপনাকে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, আপনাকে গুগলে মূল বা সিড কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করতে হবে। তারপর গুগলের সার্চ থেকে প্রাসঙ্গিক বা সাজেশন কিওয়ার্ড থেকে ধারণা নিয়ে অথবা এসইও টুলস দিয়ে একটি লং টেইল কিওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে। প্রতি মাসে যে কিওয়ার্ড সার্চ করার সংখ্যা ২৫০ বা তার চেয়ে কম। মনে রাখতে হবে, কেজিআর কিওয়ার্ড মূলত লং টেইল কিওয়ার্ড এবং এই সূত্র শুধু লং টেইল কিওয়ার্ডের ক্ষেত্রে কাজ করে। আমরা কিওয়ার্ড এভরিহোয়ার টুলস দিয়ে একটি লং টেইল কিওয়ার্ড ‘কেজিআর ফর্মুলা’ নির্বাচন করলাম, যার মাসিক সার্চ ভলিউম ৯০। এটি মূলত সার্চ টার্ম, যা দিয়ে শিরোনামের সার্চ ফলাফল জানা যায়। দ্বিতীয়ত, আমরা ওই কিওয়ার্ডের আগে allintitle: বসিয়ে, অর্থাৎ ‘allintitle:Keyword Golden Ratio Formula’ লিখে গুগলে সার্চ করলাম এবং এর সার্চ রেজাল্ট পেলাম সাতটি। এখন যদি আমরা কেজিআর বা কিওয়ার্ড গোল্ডেন রেশিওর ফর্মুলা অনুসারে পরীক্ষা করে দেখি: কেজিআর: ৭/৯০ = ০.০৭। যেখান থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে এই কিওয়ার্ডে কাজ করলে র্যাঙ্ক করা অনেক সহজ হবে।
কেজিআর কিওয়ার্ডের কিছু সুবিধা
১. নতুন সাইটের জন্য কেজিআর কিওয়ার্ড বেশ কার্যকর। কেজিআর কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম ২৫০–এর মধ্যে থাকে। তাই একটা নতুন সাইটে এগুলোকে র্যাঙ্ক করা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়। ২. একটা সাইট যখন নতুন থাকে, তখন হাই সার্চ ভলিউমের কিওয়ার্ড দিয়ে আর্টিকেল লিখে সেগুলোকে শীর্ষ তালিকায় নিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। তাই এ ক্ষেত্রে কেজিআর কিওয়ার্ডের বিকল্প নেই। ৩. কেজিআর কনটেন্টগুলোকে তালিকার ওপরে আনতে সাধারণত কোনো ব্যাকলিংকের (নিজের ওয়েবসাইটের র্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য অন্য কোনো ওয়েবসাইটের লিংক ব্যবহার করা) দরকার হয় না। আর্টিকেল প্রকাশ করার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সেগুলো র্যাঙ্ক করে। ৪. ব্যাকলিংক ছাড়া র্যাঙ্ক করানো যায়, তাই অযথা গেস্টপোস্ট বা অন্য কিছু করতে হয় না। ৫. একটা নতুন সাইটে ব্যবহারকারী (ওয়েব ভিজিটর বা ট্রাফিক) আনা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। তাই কেজিআর সূত্র তুলনামূলক নতুন সাইটে দ্রুত সময়ে ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারে।
কেজিআর কি সব সময় কাজ করে
কেজিআর কিওয়ার্ড রিসার্চ সব সময় কাজ না–ও করতে পারে। কিন্তু রিসার্চ ও তার প্রয়োগ থেকে দেখা যায় যে ৮০ শতাংশ সময়ে এই ফর্মুলা কাজ করে। আপনি যদি যথাযথভাবে কেজিআর কিওয়ার্ড রিসার্চ করে তা আপনার সাইটে তথ্যভিত্তিক কনটেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ করেন, আশা করা যায়, আপনার সাইটও গুগলে র্যাঙ্ক করবে।
কেজিআর কিওয়ার্ডের ব্যতিক্রম
কিছু কিছু বিষয় আছে, যা নির্বাচন করে কাজ করলেও কেজিআর ফর্মুলা কাজ করে না। স্বাস্থ্যবিষয়ক: আপনি যদি স্বাস্থ্যবিষয়ক কোনো কিওয়ার্ড নির্বাচন করে কাজ করেন এবং আপনার ওয়েবসাইটটি নতুন হয়, তাহলে ই-এ-টি (এক্সপার্টিজ, অথোরিটেটিভস ও ট্রাস্ট) না থাকলে বা কম থাকার কারণে র্যাঙ্ক না করার আশঙ্কা বেশি।